সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জীবন বিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর। উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষ।

উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা যা যেকোনো চাকরির পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বায়োলজি কথার উৎপত্তি: 1800 খ্রিস্টাব্দে জন ল্যামার্ক প্রথম 'বায়োলজি' কথাটি ব্যবহার করেন, যদিও মহান গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টোটল কে বায়োলজির জনক বলে আখ্যা দেওয়া হয়।

বায়োলজি অর্থাৎ জীব বিদ্যা কে প্রথমত তিন ভাগে ভাগ করা হয়, যথা জুলজি অর্থাৎ প্রাণিবিদ্যা, ফিজিওলজি অর্থাৎ শারীর বিদ্যা এবং বোটানি অর্থাৎ উদ্ভিদবিদ্যা।

বায়োলজির অন্যান্য শাখা গুলি হল:
• এ্যানাটমী: জীবের  অভ্যন্তরীণ গঠন।
• অর্নিথলজি: পক্ষী বিদ্যা।
• ইকোলজি:পরিবেশের সঙ্গে জীবের সম্পর্ক।
• মাইকোলজি: ছত্রাকবিদ্যা।
• এন্টোমলজি: পতঙ্গ বিদ্যা।
• প্যালিয়েন্টোলজি: জীবাশ্মবিদ্যা।
• ট্যাক্সোনমি: উদ্ভিদ ও প্রাণীর শ্রেণীবিভাগ।
• ভাইরোলজি: ভাইরাস এবং ভাইরাস আক্রান্ত রোগ সম্পর্কিত বিদ্যা।
এছাড়াও বায়োলজির আরো বিভিন্ন শাখা রয়েছে।

 খাদ্য ও পুষ্টি/ জীবন বিজ্ঞান সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন- উত্তর ও মক টেস্ট-3( জীবন বিজ্ঞান)

জীবন বিজ্ঞানের আরো পড়ুন। 

পৃথিবীতে জীবের আবির্ভাব:

বিজ্ঞানীদের মতে লক্ষ লক্ষ বছর আগে তাপ আলো কিংবা তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে উৎপন্ন শক্তি জটিল প্রোটিন গঠন করে এবং নিউক্লিক অ্যাসিড গুলো জেনেটিক কোড গঠন করে। পরবর্তীতে এই অণুগুলো গুলো যুক্ত হয়ে সরল প্রাণ গঠন করে। এই প্রাণ গুলি  নিউক্লিয়াস বিহীন প্রোক্যারিওটিক  বা আদি কোষ দ্বারা গঠিত যা খুবই সরল একটি কোষ।
জটিল কোষ ইউক্যারিওটিক কোষ যা আদর্শ কোষ নামে পরিচিত উন্নত প্রাণী এবং উদ্ভিদের লক্ষ্য করা যায়। পরবর্তীততে ইউক্যারিওটিক কোষ বহুকোষী জীব গঠন করে।

জীবকুলের শ্রেণীবিভাগ:

জীববিজ্ঞানীরা জীবকুল কে প্রধানত 6 টি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন, যথা- উদ্ভিদ, প্রাণী, ছত্রাক, প্রোতিস্তা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস। 
এভাবে শ্রেণীবিভাগ এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম সুইডেনের বিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস, 1753 খ্রিস্টাব্দে দ্বিপদ নামকরণ চালু করেন যা বিজ্ঞানসম্মত নাম বলা হয়। 

*কয়েকটি জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম:
• মানুষ- Homo sapiens (হোমো সেপিয়েন্স)।
• ওরাংওটাং- Pongo pygmaeus (পনগো পিগমাস্)।
• বটগাছ-  Ficus benghalensis(ফাইকাস বেঙ্গলেনসিস)। 
• পদ্মপদ্ম ফুল -Nelumbo nucifera (নেলুম্বো নুসিফেরা)। 
• ইলিশ মাছ-Tenualosa ilisha(তেনুয়ালোসা ইলিশা)। 
• রুই মাছ- Labeo rohita(লেবীয় রহিতা ) । 
• তালগাছ -Borassus flabellifer (বোরেসাস ফ্লেবেলিফার)। 
• নারকেল গাছ - Cocos nucifera (কোকোস নুসিফেরা)। 
• রেড পান্ডা - Ailurus fulgens (আইলুরাস ফুলজেন্স)। 
• ভারতীয় চিতাবাঘ - Prionailurus bengalensis. 
• ভারতীয় সিংহ - Penthera leo persica. 
• কস্তুরী মৃগ - Moscus moschiferus. 
• বন্য মহিষ - Bubalus bubalus
• ভারতীয় হাতি - Eliphas maximus
• বাঘ - Panthers tugris. 


ব্যাকটেরিয়া

বিজ্ঞানী লিউয়েন হুক 1675 খ্রিস্টাব্দে ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেন। ব্যাকটেরিয়া গুলি হল এককোষী  অণুজীব যা প্রোক্যারিওটিক কোষ বা  আদি কোষ  দ্বারা গঠিত। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো বিভিন্ন জীবের পুষ্টি চক্রের ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আবার কিছু ক্ষেত্রে জীবের ক্ষতিসাধন করে থাকে। তাই ব্যাকটেরিয়া কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা- উপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া।

উপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলি কি ভাবে জীবের উপকার করে? 
    মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণীর অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া গুলি হজমে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ভিটামিন উৎপাদনে সাহায্য করে। 
      মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া গুলি কার্বন, নাইট্রোজেন, সালফার এবং বিভিন্ন রাসায়নিক মৌল গুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। কিছু ব্যাকটেরিয়া মৃত জীবের বিয়োজনে সাহায্য করে রাসায়নিক মৌলে রূপান্তর করে এবং অন্য কিছু ব্যাকটেরিয়া রাসায়নিক মৌল গুলিকে প্রাণী ও উদ্ভিদের ব্যবহারযোগ্য করে তোলে । 
এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া গুলোকে কাজে লাগিয়ে ভারতের রেল পরিষেবা বায়ো-টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। 

অপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলি কিভাবে ক্ষতি সাধন করে? 
  খুবই কম সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া প্রাণীর শরীরে অবস্থান করে কোষ ধ্বংস করে এবং বিভিন্ন অঙ্গের সঠিক কার্যক্রম নষ্ট করে। তাপমাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে বেশিরভাগ এইসব ব্যাকটেরিয়া গুলিকে ধ্বংস করা যায়। তাছাড়া এন্টিবায়োটিকও ব্যবহার করা হয়।

ক্ষতিসাধন ব্যাকটেরিয়া গুলির মধ্যে নিম্নে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হল-
মাইকো ব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস - টিবি রোগের জন্য দায়ী।
ভিবরিও কোলেরা (Vibrio cholerae 01- কলেরা রোগের জন্য দায়ী। 
কোকো ব্যাসিলাস (Coccobacilluos) Borderella pertussis- হুপিং কাশির জন্য দায়ী। 
• Samonella typhi- টাইফয়েড জ্বরের জন্য দায়ী । 
Spirillum minor/Streptobacillus moniliformis - Ratbite fever(রেট বাইট ফিভার) । 
• মাইকো ব্যাকটেরিয়াম ল্যাপরাই (Mycobacterium leprae) - কুষ্ঠ (Leprosy) রোগের জন্য দায়ী। 

ভাইরাস: 

ভাইরাস হল অকোষীয় অণুজীব যা মানুষ কিংবা অন্যান্য জীব জন্তুর বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। যেহেতু ভাইরাসে কোন কোষ থাকে না তাই এদেরকে জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী পদার্থ হিসেবে ধরা হয়। ভাইরাস DNA অথবা RNA নিউক্লিক  অ্যাসিড এর অতি ক্ষুদ্র অংশ দিয়ে তৈরি। এরা কেবল মাত্র জীবিত প্রাণীর দেহে বংশবিস্তার করতে পারে। 

ভাইরাস ঘটিত রোগ গুলির মধ্যে হলো  ইনফ্লুয়েঞ্জা, রেবিস, ক্যান্সার, এডস্, ইয়েলো ফিভার ইত্যাদি। 
ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে বংশবিস্তার কারী ভাইরাসগুলোকে ব্যাকটেরিওফাজ বলা হয়। 

AIDS  ভাইরাস: HIV  ভাইরাস যখন T4 লিম্ফোসাইট আক্রমণ করে তখন শরীরের  রোগজীবাণুু থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষমতা কমে কারণ T4 লিম্ফোসাইট শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা  বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি হলো  RNA ভাইরাস। 

ছত্রাক:  

ছত্রাক এককোষী কিংবা বহুকোষী জীব যা উদ্ভিদ এবং প্রাণী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। মানুষের মতো ছত্রাক পরভোজী জীব। ছত্রাক ইউক্যারিওটিক কোষ বা আদর্শ কোষ দিয়ে গঠিত।
ব্যাঙের ছাতা, মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক।
উপকারী ছত্রাক গুলির মধ্যে ইস্ট পাউরুটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। 
Protista এরা হলো ইউক্যারিওটিক কোষ দিয়ে গঠিত এক ধরনের জীব যা সালোকসংশ্লেষ সে সক্ষম কিন্তু এরা উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শৈবাল হল এই গোত্রের জীব। 

কোষ:

1665 সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক কোষ আবিষ্কার করেন। 
উদ্ভিদ কোষে কোষ প্রাচীর থাকে কিন্তু প্রাণী কোষে কোষ প্রাচীর থাকে না। 

* সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোষ কোনটি? 
উত্তর: সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোষ হলো মাইকোপ্লাজমা যার দৈর্ঘ্য 0.0001 mm। এটি একটি ব্যাকটেরিয়া কোষ। 
* সবচেয়ে বৃহত্তম কোষ কোনটি? 
উত্তর: সবচেয়ে বৃহত্তম কোষ হলো জিরাফের গলার স্নায়ু কোষ । দৈর্ঘ্যে এটি 3 মিটারেরও বেশি লম্বা। 
* মানব শরীরের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোষ কোনটি? 
উত্তর: মানব শরীরের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোষ হলো RBC অর্থাৎ লোহিত রক্তকণিকা, যার দৈর্ঘ্য মাত্র 0.00076 mm। 
* মানব শরীরের সবচেয়ে দীর্ঘতম কোষ কোনটি? 
 উত্তর: মানব শরীরের দীর্ঘতম কোষ হল স্নায়ু কোষ যার দৈর্ঘ্য প্রায় 90cm থেকে 1m হতে পারে।

আপনি কতটুকু শিখলেন যাচাই করুন।
Quiz Application

প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সময় 20 সেকেন্ড।

Time
over
score:

QUIZ RESULT

Total Questions:

Attempt:

Correct:

Wrong:

Percentage:


Follow Social Site For More